প্রাকৃতিক উপায়ে শরীর সুস্থ রাখার ১০টি কার্যকর উপায়।

প্রাকৃতিক উপায়ে শরীরের যত্ন নিয়ে শরীরকে সুন্দর রাখা যায়। এটি অনেকেই জানে না। সকলের মধ্যে অনেকেই চাই নিজের শরীরটা সবার চাইতে আলাদা হোক, বা স্মার্ট হোক, 

তার জন্য বিভিন্ন উপায় খুঁজে। আপনি যদি নিজের শরীরকে সুস্থ, এবং স্মার্ট রাখতে চান। তাহলে প্রাকৃতিক নিয়মে শরীরে সুস্থ এবং সুন্দর রাখতে, এই দশটি উপায় গ্রহণ করতে পারেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক। সেই ১০ টি উপায় কি? কি?

পেজ সূচিপত্রঃ- প্রাকৃতিক উপায়ে শরীর সুস্থ রাখার 

  • সুষম ও প্রাকৃতিক খাদ্য গ্রহণ 
  • পর্যাপ্ত পানি পান 
  • নিয়মিত ব্যায়াম 
  • পরিমিত ঘুম 
  • রোদে থেকে ভিটামিন ডি গ্রহণ 
  • গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস প্রণায়াম
  • প্রাকৃতিক উপায় ব্যবহার 
  • পরিমিত লবণ চিনি গ্রহণ 
  • মানসিক প্রশান্তি বজায় রাখা 
  • অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস পরিহার করা 
  • সর্বশেষ কথা

সুষম ও প্রাকৃতিক খাদ্য গ্রহণ

পৃথিবীতে কে-না চায়। তার নিজের শরীর সুস্থ, এবং সুন্দর ও স্মার্ট রাখতে। তাই ছেলে এবং মেয়ে  সকলে ছোটে, বিভিন্ন মাধ্যমের পিছনে। যারা নিজের শরীর ইস্মার্ট দেহের অধিকারী। 

সাধারণত তারা ছেলে মেয়ে সকলের দ্বারায় আকৃষ্ট হয়ে থাকে। আর তাই যাদের শরীরের গঠন ভালো না হ্যাংলা পাতলা তাদেরও স্বাদ জাগে নিজের শরীরকে স্মার্ট করার জন্য। 

আর তখনই তারা শরীরকে স্মার্ট এবং সুন্দর করার জন্য কৃত্রিম পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকেন। যার মধ্যে থাকে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক ও ক্ষতিকর পদার্থ। আর এই ক্ষতিকর পদার্থ থাকার কারণে। 

শরীর সুস্থ হওয়ার বদৌলতে অসুস্থতার দিকে ধাবিত হয়। আর তাই জন্য আপনি এই সমস্ত ক্ষতিকারক দিক থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারেন। শুধুমাত্র এই দশটি প্রাকৃতিক উপায়ের ভিত্তিতে।

তাই সুস্থ ও কর্মক্ষম জীবনের জন্য সুষম ও প্রাকৃতিক খাদ্য গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে প্রক্রিয়াজাত ও রাসায়নিকযুক্ত খাবারের আধিপত্যের কারণে মানুষের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বাড়ছে। 

তাই আমাদের উচিত প্রাকৃতিক উৎস থেকে প্রাপ্ত সুষম খাদ্য গ্রহণ করা। নিচে এর গুরুত্ব ও উদাহরণ আলোচনা করা হলোঃ-

সুষম খাদ্য কী?

প্রথমে আমরা জানব, সুষম খাদ্য কি? সুষম খাদ্য হলো এমন একটি খাদ্য যা দেহের প্রয়োজনীয় ছয়টি উপাদান সঠিক পরিমাণে সরবরাহ করে। এই ছয়টি উপাদান হলোঃ-
১. শর্করা (Carbohydrates)
২. প্রোটিন (Protein)
৩. চর্বি (Fat)
৪. ভিটামিন (Vitamins)
৫. খনিজ লবণ (Minerals)
৬. পানি (Water)

প্রাকৃতিক খাদ্য কী?

প্রাকৃতিক খাদ্য হলো এমন খাদ্য যা কৃত্রিম রাসায়নিক পদার্থ বা সংরক্ষক ছাড়াই সরাসরি প্রকৃতি থেকে আসে। যেমনঃ-
  • তাজা শাকসবজি
  • ফলমূল
  • দেশি ফল
  • দুধ
  • ডিম
  • মধু
  • বাদাম
  • মাছ ও মুরগি (প্রাকৃতিক পরিবেশে লালিত)

সুষম ও প্রাকৃতিক খাদ্যের উপকারিতা

✅ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
✅ হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক
✅ হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে
✅ ত্বক ও চুল সুন্দর রাখে
✅ মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়
✅ ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে
✅শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সহায়তা করে।

উদাহরণ একটি দিনের সুষম ও প্রাকৃতিক খাদ্য তালিকা সকালের নাশতাঃ-
  1. ওটস বা লাল আটার রুটি
  2. একটি সেদ্ধ ডিম
  3. কলা/আপেল
  4. দুধ বা লেবু চা (চিনি ছাড়া)
দুপুরের খাবারঃ-
  • লাল চালের ভাত
  • মুগ ডাল
  • সবজি (লাউ, পালং, করলা)
  • দেশি মাছ/মুরগি
  • টক দই
বিকেলের খাবারঃ-
  • বাদাম ও খেজুর
  • একটি মৌসুমি ফল
  • গ্রিন টি
রাতের খাবারঃ-
  • রুটি (লাল আটা)
  • ডিম ভাজি বা সবজি
  • টমেটো/শসা/গাজরের সালাদ

যেসব খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।

  • ফাস্টফুড ও জাঙ্কফুড
  • অতিরিক্ত চিনি ও লবণ
  • কৃত্রিম রঙ ও ফ্লেভার যুক্ত খাবার
  • কোমল পানীয়
  • রাসায়নিক সার ও কীটনাশকযুক্ত ফল/সবজি
প্রাকৃতিক ও সুষম খাদ্য শুধু শরীরকে সুস্থ রাখে না, বরং দীর্ঘমেয়াদে জীবনের গুণগত মানও উন্নত করে। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় সচেতন ভাবে প্রাকৃতিক ও সুষম খাদ্য অন্তর্ভুক্ত করা আমাদের সবার কর্তব্য।

পর্যাপ্ত পানি পান ও গুরুত্ব। 

পানি আমাদের জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। শরীরের প্রায় ৬০-৭০% অংশই পানি দ্বারা গঠিত। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা। তাই সুস্থ ও সুন্দর জীবনের জন্য পানি অপরিহার্য। 

নিচে পর্যাপ্ত পানি পানের প্রয়োজনীয়তা, উপকারিতা ও কিছু টিপস তুলে ধরা হলো। যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক উপকারে আসবে বলে আমি মনে করি।

কেন পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি?

  • শরীরের প্রতিটি কোষ, অঙ্গ ও টিস্যু ঠিকভাবে কাজ করার জন্য পানি প্রয়োজন।
  • হজম প্রক্রিয়াকে সক্রিয় করে।
  • দেহের বিষাক্ত উপাদান বের করে দেয়।
  • তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
  • জয়েন্ট ও অস্থিসন্ধিকে মসৃণ রাখে।
  • ত্বককে উজ্জ্বল ও কোমল রাখে।
  • ব্রেন ও মনোযোগ সচল রাখে।

পানি পানের উপকারিতা

  1. হজমে সহায়তা করে খাবার সহজে ভেঙে ফেলে ও পেট পরিষ্কার রাখে।
  2. কিডনি সুস্থ রাখে ইউরিনের মাধ্যমে বর্জ্য বের করে।
  3. চর্মরোগ কমায় ব্রণ, র‍্যাশ, রুক্ষতা হ্রাস করে।
  4. ওজন কমাতে সাহায্য করে খালি পেটে গরম পানি চর্বি গলাতে সাহায্য করে।
  5. মাথাব্যথা কমায় পানিশূন্যতা থেকে সৃষ্ট মাথাব্যথা দূর করে।
  6. শক্তি ও মনোযোগ বাড়ায়। ক্লান্তি দূর করে, উদ্যম বাড়ায়।

প্রতিদিন কতটা পানি পান করা উচিত?

  • প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ ৩-৩.৭ লিটার (প্রায় ১২-১৫ গ্লাস)
  • প্রাপ্তবয়স্ক নারী ২.৫-৩ লিটার (প্রায় ৮-১০ গ্লাস)
  • গরম আবহাওয়ায় বা ঘাম বেশি হলে আরও বেশি পরিমাণে পানি প্রয়োজন।

🕒 কখন পানি পান করা সবচেয়ে উপকারী?

✅ সকালে ঘুম থেকে উঠে ১-২ গ্লাস
✅ খাবারের ৩০ মিনিট আগে
✅ ব্যায়ামের আগে ও পরে
✅ গরমে বা রোদে বাইরে গেলে
✅ টয়লেট যাওয়ার পর
✅ রাতে ঘুমানোর ১ ঘণ্টা আগে

🚫 যেভাবে পানি পান করা উচিত নয়।

❌ খুব ঠান্ডা পানি একবারে বেশি খাওয়া।
❌ একেবারে দাঁড়িয়ে পানি পান করা।
❌ খাবার খাওয়ার ঠিক পরেই অনেক পানি পান।

জীবন ও স্বাস্থ্য রক্ষায় পানি অপরিহার্য। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত ও সঠিকভাবে পানি পান করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। পানিশূন্যতা দূর করুন। সুস্থ জীবন উপভোগ করুন।

🧘‍♂️ নিয়মিত ব্যায়াম।

নিয়মিত ব্যায়াম শুধু শরীরকে সুস্থ রাখে না, বরং মানসিক প্রশান্তিও এনে দেয়। নিচে নিয়মিত ব্যায়ামের কিছু উপকারিতা ও পরামর্শ তুলে ধরা হলো।

ব্যায়ামের উপকারিতা

  • শরীর ফিট থাকে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে ও পেশি শক্তিশালী হয়।
  • হৃদয় সুস্থ থাকে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়।
  • মনের প্রশান্তি দুশ্চিন্তা, বিষণ্ণতা কমে যায়।
  • ঘুম ভালো হয়। গভীর আরামদায়ক ঘুম শরীরকে নিশ্চিত করে সুস্থ রাখতে ।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে ঠান্ডা, ফ্লু ইত্যাদির ঝুঁকি হ্রাস পায়।
  • চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে।
  • হাড় ও জয়েন্ট মজবুত হয়। বয়স বেশি বাড়লেও ফিটনেস বজায় থাকে।
  • মানসিক সতেজতা মন চাঙ্গা থাকে, আত্মবিশ্বাস বাড়ে।

🕒 কোন সময় ব্যায়াম করা ভালো?

  • সকালবেলাঃ- ফ্রেশ বাতাস ও প্রাণবন্ত দিন শুরু করার জন্য।
  • বিকেলঃ- কাজের শেষে শরীর ও মনকে চাঙ্গা করতে।
  • রাতে হালকা হাঁটাঃ- হজমে সহায়তা করে, ঘুম ভালো হয়।

🏃‍♂️ সহজ কিছু নিয়মিত ব্যায়াম।

  • 🏃‍♂️হাঁটা (৩০ মিনিট) সহজ সবার জন্য উপযোগী হৃদয় ভালো রাখে।
  • 🤸‍♂️হালকা দৌড় (১৫-২০ মিনিট) ওজন কমাতে সহায়ক, শরীর সক্রিয় রাখে।
  • 🧘যোগব্যায়াম (২০ মিনিট) মানসিক প্রশান্তি নমনীয়তা বৃদ্ধি।
  • 🚴‍♀️সাইকেল চালানো (৩০ মিনিট) পায়ের পেশি শক্তিশালী করে।
  • 🪢দড়ি লাফ (১০ মিনিট) ক্যালরি বার্ন করে শরীর ফিট রাখে।
মনে রাখবেন। হালকা গরম পানি পান করে ব্যায়াম করুন। খালি পেটে না করাই ভালো। অতিরিক্ত ব্যায়াম না করে নিয়মিত ও পরিমিত ব্যায়াম করুন। বয়স ও শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী ব্যায়াম নির্বাচন করুন।

“নিয়মিত ব্যায়াম করুন, সুস্থ জীবন বেছে নিন।”

পরিমিত ঘুম

ঘুম শুধুমাত্র বিশ্রাম নয়, এটি শরীর ও মনের পুনর্গঠনের এক গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। পর্যাপ্ত ও সঠিক সময়ে ঘুম আপনার কর্মক্ষমতা, স্মৃতি, মনোভাব ও স্বাস্থ্যের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে।

🕒 প্রতিদিন কত ঘুম প্রয়োজন?

বয়স প্রয়োজনীয় ঘুম
  • শিশু (১-৫ বছর) ১১–১৪ ঘন্টা।
  • কিশোর (৬–১৭ বছর) ৮–১০ ঘন্টা।
  • প্রাপ্তবয়স্ক (১৮–৬০+) ৭–৯ ঘন্টা।

পরিমিত ঘুমের উপকারিতা

  1. 🧠 মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
  2. 💪 শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
  3. 💖 হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমে।
  4. 😌 মন ভালো থাকে, দুশ্চিন্তা কমে।
  5. 🧬 হরমোন ব্যালেন্স ঠিক থাকে।
  6. ⚖️ ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  7. 👀 চোখ ও ত্বক উজ্জ্বল থাকে।

🚫 অপর্যাপ্ত ঘুমে যা হতে পারে।

  • একাগ্রতা হ্রাস
  • ভুল সিদ্ধান্ত
  • উচ্চ রক্তচাপ
  • মেজাজ খিটখিটে হওয়া
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া

🌙 ভালো ঘুমের জন্য টিপস:

✅ প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার চেষ্টা করুন।
✅ ঘুমানোর আগে মোবাইল/টিভি এড়িয়ে চলুন।
✅ ঘরটি নীরব, অন্ধকার ও আরামদায়ক রাখুন।
✅ রাতের খাবার হালকা খান।
✅ ঘুমের ২ ঘণ্টা আগে কফি/চা খাবেন না।

"ঘুম হোক নিয়মিত, জীবন হোক সুস্থ ও সজীব!"

রোদে থেকে ভিটামিন ডি গ্রহণ। 

রোদে থাকা মানে সূর্যের আলোয় কিছু সময় শরীরকে উন্মুক্ত রাখা। সূর্যের আলো (বিশেষ করে UVB রশ্মি) ত্বকের সংস্পর্শে এলে শরীরে স্বাভাবিকভাবে ভিটামিন ডি তৈরি হয়। ভিটামিন ডি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন যা হাড়, দাঁত, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে।

ভিটামিন ডি কেন দরকার?

  • হাড় ও দাঁতের জন্যঃ- ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে। এতে হাড় মজবুত হয়। ও হাড় ক্ষয় বা ভঙ্গুরতা কমে।
  • ইমিউন সিস্টেমঃ- এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ঠান্ডা-সর্দি-জ্বরের মতো সাধারণ রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
  • মানসিক স্বাস্থ্যেঃ- ভিটামিন ডি মন ভালো রাখতে সাহায্য করে, বিষণ্নতা কমাতে সহায়তা করে।

গভীর শ্বাসপ্রশ্বাস (প্রাণায়াম)

✅ ধীরে শ্বাস নিন → ধরে রাখুন → ধীরে ছেড়ে দিন।
✅ মন শান্ত থাকে, দুশ্চিন্তা কমে।
✅ ফুসফুস ও হৃদপিণ্ড শক্তিশালী হয়।
✅ প্রতিদিন মাত্র ৫–১০ মিনিট।
✅ সকালে খালি পেটে অথবা রাতে ঘুমের আগে করুন।

প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার

প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার মানে হলো এমন উপাদান বা বস্তু ব্যবহার করা, যা কৃত্রিম রাসায়নিক ছাড়াই সরাসরি প্রকৃতি থেকে পাওয়া যায়। যেমনঃ- গাছপালা, ফলমূল, ভেষজ, মাটি, পানি, আলো ইত্যাদি। 

যা কৃত্রিম রাসায়নিক মুক্ত ও পরিবেশ বান্ধব। এসব উপাদান আমাদের শরীর মন ও পরিবেশকে সুস্থ রাখে, রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং টেকসই জীবন ধারার পথে এগিয়ে নেয়।

পরিমিত লবণ ও চিনি গ্রহণ

🔹 অর্থ:
পরিমিত লবণ ও চিনি গ্রহণ মানে হলো প্রয়োজন অনুযায়ী পরিমাণে লবণ ও চিনি খাওয়া, অতিরিক্ত নয়।

🔹 কারণ:

  • অতিরিক্ত লবণ উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • অতিরিক্ত চিনি ডায়াবেটিস, স্থূলতা, দাঁতের ক্ষয় ইত্যাদির কারণ হতে পারে।

🔹 পরামর্শ:

  1. দৈনিক খাবারে কম লবণ ব্যবহার করুন।
  2. প্রক্রিয়াজাত খাবার (চিপস, ফাস্টফুড ইত্যাদি) এড়িয়ে চলুন।
  3. কৃত্রিম মিষ্টি ও কোমল পানীয় এড়িয়ে চলুন।
  4. প্রাকৃতিক চিনি (ফল, মধু) বেছে নিন।

🔹 উপকারিতা:

  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে
  • ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে
  • হৃদযন্ত্র সুস্থ থাকে
  • ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে

"স্বাস্থ্যই সম্পদ, পরিমিত লবণ-চিনি হোক অভ্যাস!"

মানসিক প্রশান্তি বজায় রাখা 

মানসিক প্রশান্তি বজায় রাখার উপায়

১. নিয়মিত প্রার্থনা ও ধ্যান:
আত্মার শান্তির জন্য ইবাদত, নামাজ ও ধ্যান খুবই কার্যকর।

২. পর্যাপ্ত ঘুম:
প্রতিদিন পর্যাপ্ত ও স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ ঘুম মনের ভার কমায়।

৩. ইতিবাচক চিন্তা:
নেগেটিভ চিন্তা এড়িয়ে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলুন।

৪. সুন্দর সম্পর্ক:
পরিবার ও বন্ধুদের সাথে ভালো সম্পর্ক মানসিক প্রশান্তি বাড়ায়।

৫. শারীরিক ব্যায়াম:
হালকা ব্যায়াম যেমন হাঁটা, যোগব্যায়াম স্ট্রেস কমায়।

৬. পর্যাপ্ত বিশ্রাম:
দৈনন্দিন কাজের মাঝে ছোট বিশ্রাম নিন।

৭. প্রকৃতির সাথে সংযোগ:
বাগান, পাহাড়, নদীর ধারে সময় কাটানো মনকে শিথিল করে।

৮. নিজের পছন্দের কাজ করুন:
হবি, গান, লেখালেখি বা ছবি আঁকা ইত্যাদি মানসিক শান্তির জন্য উপকারী।

৯. অতিরিক্ত চাপ এড়ানো:
অকারণ উদ্বেগ বা চাপ এড়িয়ে চলুন।

🔹 উপসংহার:
মানসিক প্রশান্তি জীবনের অন্যতম বড় সম্পদ। নিয়মিত মনোযোগ ও সচেতনতা বজায় রাখলে তা অর্জন করা সম্ভব।

স্লোগান:
“মন শান্তি, জীবন সুনিশ্চিত।”

অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস পরিহার করার

অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস কী? যেসব কাজ বা রীতি শরীর ও মনের ক্ষতি করে, যেমন অতিরিক্ত ধূমপান, অ্যালকোহল সেবন, অনিয়মিত খাবার, অতিরিক্ত জাঙ্ক ফুড খাওয়া, কম শারীরিক ক্রিয়াকলাপ ইত্যাদি।

অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস পরিহার করার কারণ:

  • শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
  • হৃদরোগ, ডায়াবেটিস উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ে।
  • মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
  • দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি হয়।
কিভাবে অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস পরিহার করবেন?
  • পরিকল্পনা তৈরি করুনঃ- ধীরে ধীরে আপনার জীবনে পরিবর্তন আনুন। ছোট ছোট ধাপে ধাপে অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস কমান।
  • সঠিক তথ্য জেনে নিনঃ- আপনার অভ্যাসের ক্ষতিকারক প্রভাব সম্পর্কে সচেতন হন।
  • বিকল্প খুঁজে নিনঃ- ধূমপানের বদলে মিষ্টি ফল খাওয়া, চিপসের বদলে বাদাম খাওয়া ইত্যাদি
  • সাহায্য নিনঃ পরিবার বন্ধু বা বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন।
  • নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করুনঃ- শরীর ও মনকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
  • নিজেকে পুরস্কৃত করুনঃ- অভ্যাস পরিবর্তনের জন্য নিজেকে ছোট ছোট পুরস্কার দিন।

অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস ছেড়ে সুস্থ জীবন যাপন নিশ্চিত করুন। আপনার স্বাস্থ্যই আপনার সবচেয়ে বড় সম্পদ।

“অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস ছাড়ুন, সুস্থ জীবন বাঁচান!”

সর্বশেষ কথা

প্রিয় পাঠক নিশ্চয়ই অবগত হয়েছেন। যে উপরের বিষয় পড়ে, সুস্থ-সবল দেহ, সুস্থ-সবল মন, প্রতিটি মানুষেরই কাম্য। তাই এখন সুস্থ থাকার জন্য নিয়মিত টিপসগুলো মেনে চলি।

সুস্থ সবল দেব মন ভরে তুলি, এই প্রত্যাশায়। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি। যদি আর্টিকেলটি আপনার একটু উপকারে আসে। অবশ্যই লাইক কমেন্ট করে, পাশে থাকবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন